আমি এখন যাকাতুল/সাদাকাতুল ফিতরা সম্পর্কে সঠিক তথ্য এবং বক্তব্যের ভিত্তিতে কিছু কথা বলব, যাতে এই সম্পর্কিত সকল প্রশ্ন - উত্তর, যুক্তি -কুযুক্তি এবং ধোয়াসা কেটে যাবে সবার ইনশাআল্লাহ।
মনে সংকীর্ণতা রেখে দয়া করে ব্লগ টা পরবেন না আশা করি।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রত্যেক গোলাম, আযাদ, পুরুষ, নারী, প্রাপ্ত বয়স্ক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের উপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদাকাতুল ফিতর হিসেবে খেজুর হোক অথবা যব হোক এক সা’ পরিমাণ আদায় করা ফারয করেছেন এবং লোকজনের ঈদের সালাতের বের হবার পূর্বেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। (১৫০৪, ১৫০৭, ১৫০৯, ১৫১১, ১৫১২, মুসলিম ১২/৪, হাঃ ৯৮৪, আহমাদ ৫১৭৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪১২)
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামাহ্ ইবনু কা’নাব, কুতায়বাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ..... ইবনু উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম দাস-দাসী এবং স্বাধীন পুরুষ ও মহিলা সকলের উপর এক সা’ হিসেবে খেজুর বা প্রত্যেক রমাযান মাসে সদাকায়ে ফিতর নির্ধারণ করেছেন।
৩) সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীস নম্বর : ৩/১৮২৭
ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোযাদারের অনর্থক কথাবার্তা ও অশালীন আচরণের কাফ্ফারাস্বরূপ এবং গরীব-মিসকীনদের আহারের সংস্থান করার জন্য সদাকাতুল ফিতর (ফিতরা) নির্ধারণ করেছেন। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের পূর্বে তা পরিশোধ করে (আল্লাহর নিকট) তা গ্রহণীয় দান। আর যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের পর তা পরিশোধ করে, তাও দানসমূহের অন্তর্ভুক্ত একটি দান।
৪) সুনান আবু দাউদ : ১৬০৯ নম্বর হাদিস
মুহাম্মাদ ইব্ন খালিদ আদ-দিমাশকী (রহঃ) .... ইব্ন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম সাদাকাতুল ফিতর রোযাকে বেহুদা ও অশ্লীল কথাবার্তা ও আচরণ থেকে পবিত্র করার উদ্দেশ্যে এবং মিস্কীনদের খাদ্যের ব্যবস্থার জন্য ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা (ঈদুল্ ফিতরের) নামাযের পরে পরিশোধ করে তা অন্যান্য সাধারণ দান-খয়রাতের অনুরূপ হিসাবে গণ্য। (ইব্ন মাজা)।
--------
এখন আমরা এই হাদিস গুলো বিশ্লেষণ করলে কিছু প্রশ্ন উত্তর পেয়ে যাই, তা হলো
১) যাকাতুল ফিতরা ফরজ নাকি সুন্নাহ? উত্তর: ফরজ
২) কাদের উপর ফরজ?
উত্তর : প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরজ, এমন কি ঈদের সলাতের আগে যদি কোনো মুসলমানের বাচ্চা প্রসব হয়, তার উপরেও এটা ফরজ হয়ে যাবে।
৩) কি দিয়ে দিতে হবে?
উত্তর : খাদ্য দিয়ে, তা হতে পারে চাল, গম, আটা, কিসমিস, পনীর ইত্যাদি।
৪) কতখানি খাদ্যদ্রব্য দিয়ে দিতে হবে?
উত্তর: ১ সা পরিমাণ খাদ্য হতে হবে। এখন ১ সা কতটুকু তা বিশ্লেষণে সৌদি ফতোয়া বোর্ড সহ গ্রান্ড মুফতি বলেছেন আড়াই থেকে তিন কেজির মাঝে হবে। আমাদের সালাফি মানহাজের ফতোয়া বোর্ডের মতামত ও আড়াই থেকে তিন কেজি। আপনি এর মাঝেই তা রাখবেন।
৫) যাকাতুল ফিতরা কাদের দিতে হবে?
উত্তর : বিশেষ করে মিসকিন এবং সর্বচ্চো ভিক্ষুক। মিসকিন এবং ভিক্ষুকের মাঝে তফাত হলো এই যে মিসকিন যারা তাদের বাসায় ১/২ বেলার খাবার থাকে না, তারা কারো কাছে চায় ও না, খেতেও পায় না। এদের বলা হয় মিসকিন। অন্যদিকে ভিক্ষুক তারা তো চেয়ে চিন্তেই খায়। তো সর্বচ্চো গুরুত্ব পাবে মিসকিন, তারপর পাবে ভিক্ষুক।
৬) ফিতরা দেওয়ার সময় কখন?
উত্তর : ঈদের সালাত পড়তে যাওয়ার আগে ফিতরা আদায় করে দিতে হবে। ফোকাহ ইকরামদের মতে হবে ফতোয়া বোর্ডের মতে আপনি সর্বোচ্চ ১-২ দিন আগে ফিতরা দিতে পারবেন তবে সবচেয়ে উত্তম হলো ঈদের সলাতের আগের সময়। অর্থাৎ আপনি যদি ২৯-৩০ সিয়ামে দিতে পারবেন। দিতেই হবে।
৭) কেনো দিব যাকাতুল ফিতরা?
উত্তর : যাকাতুল ফিতরার দেয়ার প্রধান কারণ আমরা কেউ ফেরেস্তা না, আমাদের সিয়াম পালনে হাজার হাজার ত্রুটি হয়, এমনি কারো সাথে জোরে কথা বলাও নিষেধ, চোখে কোনো বাজে জিনিস দেখা বারণ ইত্যাদি ইত্যাদি ত্রুটি, তো এসব ত্রুটি থেকে আল্লাহ ক্ষমা করে সলিড সিয়াম টা গ্রহণ করেন এই যাকাতুল ফিতরা দেওয়ার কারণে। প্রধান কারণ টাই হলো নিজের সিয়াম আল্লাহ র কাছে কবুল করানো৷ এর পরের কারণ হলো যারা মিসকিন তারা যাতে এই দিনটাতে চিন্তা মুক্ত থাকেন খাবারের ব্যাপারে।
------
এগুলো ছিলো প্রধান কনক্লুশন হাদীস থেকে, এটার পরে মনে হয় না আপনাকে কারো কাছে যেতে হবে ফিতরার ব্যাপার নিয়ে।
-----
এখন আসুন দেখি আমাদের দেশের কিছু অযুক্তি কুযুক্তি, যা প্রতিনিয়ত মানুষ দিচ্ছেন। এবং ফিতরা নিয়ে মানুষের ভুলের সম্ভার।
১) ফিতরা খাদ্যের পরিবর্তে টাকা দিয়ে দিলে সমস্যা কি?
উত্তর : সমস্যা হলো আপনি আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল (স) থেকে ২ লাইন বেশি দ্বীন বুঝে গেছেন, রাসূল বলসেন খাদ্য দিয়ে দিতে, খাদ্য দিয়েই দিতে হবে এটাই চূড়ান্ত। প্রমাণ হিসেবে সহী বুখারির ১৫০৪ নাম্বার হাদিস খুলে দেখবে সেখানে বলা আছে রাসূল(স) ইন্তেকালের পর সাহাবীদের যুগে মু‘আবিয়া (রাঃ) ফিতরা অর্থ দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) এতে চরম প্রতিবাদ করলেন। তিনি বললেন -
" আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন সর্বদা ঐভাবেই ফিতরা আদায় করব যেভাবে আগে আদায় করতাম। (মুসলিম ১ম খন্ড ৩১৮ পৃষ্ঠা)"
ইমাম হাকিম ও ইবনু খুজাইমাহ সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, ‘আইয়ায বিন ‘আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, তার নিকট রামাযানের সদাকাহ সম্পর্কে বর্ণনা করা হলে তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যামানায় যে পরিমাণ সদাকাতুল ফিতর আদায় করতাম তা ব্যতীত অন্যভাবে বের করব না। এক সা‘ খেজুর, এক সা‘ গম, এক সা‘ যব ও এক সা‘ পনির। কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করল, গমের দু’ মুদ দ্বারা কি আদায় হবে না? তিনি বললেন, না। এটা মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর মনগড়া নির্ধারিত। আমি সেটা গ্রহণও করব না বাস্তবায়নও করব না। (ফাতহুল বারী ৩য় খন্ড ৪৩৭ পৃষ্ঠা)
অর্থাৎ বুঝা গেলো খাদ্য ব্যতীত কোনো কিছু দিয়ে ফিতরা দেয়া যাবে না।
২) [কুযুক্তি] ১৪০০ বছর পূর্বে টাকা পয়সার লেনদেন ছিলো না, তাই তখন খাদ্য দিয়ে দিতে হয়েছে, এখন টাকা পয়সা আছে তাই টাকা দিয়ে দিলেও হবে।
উত্তর : ব্যবসা বানিজ্য সব করা হতো তখন মুদ্রা দিয়ে, আরব রা ব্যবসায় অনেক এগিয়ে ছিলো কারণ জায়গা টা একটা ঘাটির মত ব্যবহার হতো। যে বলবে অর্থ লেনদেন হতো না সে নগদ মিথ্যা কথা বললো। সুদের ব্যাপারে আদেশ, যাকাতের আদেশ, কুরবানির আদেশ সব কিছু অর্থ ভিত্তিক, অর্থাৎ অর্থনৈতিক লেনদেন তখনো ছিলো এখনো আছে।
৩) [কুযুক্তি] ধরেন একজন মিসকিন, তাকে আমিও দিলাম ফিতরা, আপনিও দিলেন ফিতরা, তাহলে লোকের কি চাল ডাল এসব বেশি হয়ে যাবে না? এর চেয়ে ভালো টাকা দিয়ে দি, ও ওর মত প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিবে।
উত্তর : আপনার যখন এতই দরদ হচ্ছে তাহলে আপনি ৩ কেজি চাল দিয়ে ফিতরা টা দেন, তারপর আপনি তাকে লাখ টাকা দেন, দিতে কে মানা করলো। আপনার টাকা বেশি আপনি ৩ কেজি আজোয়া খেজুর দেন যার প্রতি কেজি ৩-৪ হাজার করে। চাল এ আটকে আছেন কেনো।
ফিতরা টা দিয়ে তারপর আপনি দান সদাকা করেন ভরপুর টাকা দিয়ে। কে আটকায়? আপনি সেই দেড়শ দুইশ টাকা দিয়ে খালাস হয়ে যেতে চাইলে তো হবে না। যেখানে রাসূল (সা) ফিক্সড করে দিলো আর আপনি সেখানে যুক্তি দেখাচ্ছেন, এর চেয়ে ভয়ানক কিছু নেই। হয় আপনি রাসূল (সা) থেকে দ্বীন বেশি বুজছেন, নয় এটা প্রমাণ করতেসেন রাসূল (সা) সঠিক দ্বীন প্রচার করতে পারেন নাই। ( নাউজুবিল্লাহ)
----------
এখন কেউ বলবেন দেশের সরকারি ইসলামি ফাউন্ডেশন বলেছে ফিতরা হবে এতো টাকায়, আমরা কি মানবো না?
না আপনি মানবেন না, আপনি মানতে পারেন না, এটা ফরজ, আপনি এটা যুক্তি দিয়ে কোনো দিন বাচতে পারবেন না।
পুরো দুনিয়া যদি টাকা দিয়ে দেয়, পুরো দুনিয়াই ভুল। হাদিস তো বুখারী মুসলিম আপনি খন্ডাবেন কি দিয়ে।
-----
এতো দিন যারা ফিতরা দিয়েছেন নিজের অজ্ঞতা কিংবা গোড়ামির কারণে তারা ক্ষমা চান আল্লাহ র কাছেন এবং আপনাদের সব৷ ফিতরা জমা হয়েছে সদাকায়, ফিতরা হিসেবে নয়।
এই বছর যারা ফিতরা দিয়ে দিয়েছেন টাকা দিয়ে, তারা সেটার কথা ভুলে যান, ওইটা সদাকা হয়েছে, আপনাকে পূনরায় ফিতরা দিতে হবে খাদ্য দিয়ে, এবং এটাই চূড়ান্ত।
------
আমার পক্ষ থেকে কিছু নসিহা,
আপনারা যারা এই হাদীস গুলো জানলেন তারা সবাই মেনে নেন, পলন করলেন কি করলেন তা আপনাদের ব্যাপার কিন্তু আপনাকে মেনে নিতে হবে এটাই সহী। কারণ পালন না করার পাপ একটা, আর আল্লাহর রাসূল (সা) এর কথা না বিশ্বাস করা সরাসরি মুশরেক কুফরির কাতারে চলে যায়, তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা আমার দ্বীনি ভাই, আপনাদের অকল্যাণ আমি চাই না।
সকল আলেমদের কথা যাচাই করতে শিখুন, তারা যা বলে তা আসলেই সত্যি কিনা একটু ঘাটুন, প্রচুর রিসোর্স আছে আলহামদুলিল্লাহ এখন। অন্ধের মত বিশ্বাস করবেন না। নাম নিয়ে বলি, আমার প্রিয় এক শায়েখ জনাব সাইফুল্লাহ এই ফিতরার ব্যাপারে নমনীয়তা দেখিয়েছেন, আমি উনার সঠিক হিদায়েত কামণা করি।
ইসলাম বুঝার এবং মানার ক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের যুক্তি ভিত্তিহীন যদি তা আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (স), সাহাবী একরাম, তাবেইনগন, তাবেতাবেইন গণের কথার বিরূদ্ধে যায়।
আল্লাহর রাসূল (স) সব সময় কোনো কথা বলার পর তা সাহাবীদের বলতেন যে তোমরা কি বুঝলে, এই কথা দিয়ে কি মনে হলো... যখন রাসূল (সা) এসব জানতে চাইতেন তাদের উত্তর ছিলো একটাই - " আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল ভালো জানেন "
তারপর রাসূল তা ব্যাখ্যা করতেন যেমন করে আল্লাহ তাকে নির্দেশ করতেন।
অর্থাৎ দ্বীন বুঝতে হলে আমাদের রাসূলের ব্যাখা এবং সাহাবী রা কিভাবে তা বুঝেছিলেন তা জানতেই হবে। সাহাবিদের পর তাবেইন ও তাবেতাবেইন রাই ছিলো শেষ এই বুঝার ব্যাপারে।
এর পর যতই ঈমাম কিংবা বুজুর্গানে দ্বীন যে মতবাদ দেন না কেনো তা যদি সাহাবীদের মতের সাথে না মিলে তাহলে সেই মতবাদের দাম "নাই পয়সা"
আপনারা চাইলে একটা দারুণ কাজ করা যায় ফিতরা দিয়ে, ধরেন আপনারা ৫ জন মানুষের পরিবার, আপনারা এমন ২/১ জন মিসকিন খুজে নিবেন, নিয়ে ৫ জন মানুষের ৫ রকম খাদ্য প্রদান করতে পারেন সেই মিসকিন পরিবারকে। ধরেন আপনি চাল দিলেন, আপনার স্ত্রী ডাল দিলেন, আরেকজন তেল দিলেন ইত্যাদি ইত্যাদি করে দিলেন। এই আইডিয়া ব্যাবহার করেন শায়েখ আহমুদুল্লাহ।
আর যদি আপনি আশে পাশে মিসকিন সং্খ্যা বেশি পান তাহলে ভাগ ভাগ করে দেয়াই ভালো, সবাই পেলো।
---------
আমি যা কিছু লিখলাম তা অনেক আলেমদের বর্ণনার একটা বহিঃপ্রকাশ, আমি হাদিস এবং তাদের কথা গবেষণা করে সব কথা উপরে লিখেছি।
Posted By: Mahabub
Post ID: 7030
Posted on: 3 weeks 4 days ago
Authorized by: HiRA
13 Comments403 Views
BaaZ
এ ছাড়া ইমাম বুখারি (রহ) তার সহিহ বুখারিতে হজরত মুয়াজ ইবনে জাবালের (র) বক্তব্য উল্লেখ করেছেন, তিনি ইয়ামেনবাসীদের বলেন, তোমরা সদকার মধ্যে খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে কাপড় নিয়ে আসো। কেননা, এটা তোমাদের জন্য অধিকতর সহজ এবং মদিনার সাহাবীগণের জন্যও অধিক উপযোগী। (বুখারি, হাদিস নং ১১৪৭)
এই হাদিস টা ঠিক হলে যারা বলে ফিতরা শুধু খাদ্য দিয়ে দিতে হবে তাদের অনেক শিখতে হবে যান্তে হবে।
3 weeks 1 day ago
Soto_Khoka
এখন যদি ইমাম আবু হানিফ রহ: আর হাসান বসরী রহ: এর ভুল ধরতে যাই তাহলেই কিন্তু সমস্যা।
3 weeks 1 day ago
Soto_Khoka
দ্বারা ১ কিলো ৬৩৬ গ্রাম।
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা এক সা' পরিমাণ খাদ্য অথবা এক সা' পরিমাণ জব অথবা এক সা' পরিমাণ কিসমিস অথবা এক সা' পরিমাণ পনির দিয়ে জাকাতুল ফিতর তথা সাদকাতুল ফিতর আদায় করতাম। (বুখারি, হাদিস নং ১৫০৬)
শরিয়তের দলিল দ্বারা এটাও প্রমাণিত যে, উপরোক্ত খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে সেগুলোর মূল্য আদায় করার ও অবকাশ রয়েছে। আমরা এর স্বপক্ষে কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরছি।
হজরত যুহাইর (রহ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত ইসহাক (রহ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেন— আমি সাহাবায়ে কেরামকে (র) এ অবস্থায় পেয়েছি যে, তারা রমজানে সদকাতুল ফিতর খাবারের পরিবর্তে টাকা দিয়ে আদায় করতেন। (ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং ১০৩৭১)
২. হজরত হাসান বসরি (রহ) বলেন, টাকা দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। (ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং ১০৩৭০)
৩. অনুরূপভাবে হজরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের (রহ) চিঠি— হজরত কুররা (রহ) বলেন, আমাদের কাছে হজরত ওমর বিন আব্দুল আজিজের (রহ) চিঠি এসেছে যে, সদকাতুল ফিতরের ক্ষেত্রে প্রত্যেক মানুষ থেকে নিসফে সা' খাবার অথবা অর্ধেক দেরহামের মূল্য গ্রহণ করা হবে । ( ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং ১০৩৬৯)
ইমাম বুখারির (রহ) অন্যতম শিক্ষক হলেন ইমাম আবু বকর ইবনে আবি শাইবা (রহ)। তিনি তার জগৎ বিখ্যাত কিতাব মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা এর জাকাত অধ্যায়ে সদাকাতুল ফিতর টাকা দ্বারা আদায় করা সংক্রান্ত একটি পরিচ্ছেদ এনেছেন এবং পাঁচটি হাদিস এনে প্রমাণ করেছেন যে, সাহাবায়ে কেরাম টাকা দিয়ে সদকাতুল ফিতর আদায় করেছেন।
এ ছাড়া ইমাম বুখারি (রহ) তার সহিহ বুখারিতে হজরত মুয়াজ ইবনে জাবালের (র) বক্তব্য উল্লেখ করেছেন, তিনি ইয়ামেনবাসীদের বলেন, তোমরা সদকার মধ্যে খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে কাপড় নিয়ে আসো। কেননা, এটা তোমাদের জন্য অধিকতর সহজ এবং মদিনার সাহাবীগণের জন্যও অধিক উপযোগী। (বুখারি, হাদিস নং ১১৪৭)
ইমাম আবু হানিফা (রহ) এ দৃষ্টিকোণ থেকেই বলেছেন— টাকা দিয়ে আদায় করা উত্তম। কারণ এটি মানুষের জন্য সহজ ও উপকারী।
আল্লামা ইবনু রুশাইদ (রহ) বলেন, এ মাসায়ালার ক্ষেত্রে ইমাম বুখারি হানাফিদের সহমত পোষণ করেছেন। (ফতহুল বারি, ইবনে হাজার : ৩/৩১২)
মোটকথা, সাহাবায়ে কেরাম ও সালাফদের কর্ম ও বক্তব্য দ্বারা স্পষ্ট যে, টাকা দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করা যায়; বরং ক্ষেত্র বিশেষ টাকার দ্বারা আদায় করা উত্তম।
3 weeks 1 day ago
Soto_Khoka
তুই যেইভাবে লিখেছিস, বা যেখান ঠেলে কালেকশান করেছিস এখানে ফেতনা ছাড়া কিছুই নাই। আলেমদের, মুফতির ভুল ধরতে গেলে আগে তাদের পর্যায়ে জিতে হবে, তাদের মতো পড়াশুনা করতে হবে।
3 weeks 1 day ago
Soto_Khoka
ফিতরা আলাদা যাকাত আলাদা। এখানে জাকাতুল ফিতর বলে কিছুই নাই। আর হাদিস অনেক পড়াশুনা করেই ফতোয়া দেয়া হয়। ফতোয়া সময় পরিবেশ অনুযায়ী হয়। উদাহরণ: আগে ছেলে মেয়ে এক সাথে নামাজ আদায় করতো, সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, এখন কি তাই বলে সব ছেলে মেয়ে এক সাথে নামাজ পড়বে, আর পড়তে গেলে কি হবে বুঝে দেখ? যাকাতুল ফিটর হবে না, সদকায়ে ফিতর হবে। ফিতর আদায় করতে হবে শস্য দিয়ে, যেমন জব, গম, পনির, কিশমিশ ইত্যাদি। এখন এর অবস্থায় আসি, এখন আমার সামর্থ আছে গম দিয়ে দেয়ার, আমি কি করলাম একজন কে ৫০ কেজি গম দিলাম ঈদের আগে, সে এই গম দিয়ে কি করবে? ঈদের দিন গমের রুটি খাবে? সে নিশ্চিত গম কম দামে বিক্রি করে দিবে। ওলামায়ে কেরামগণ ফতোয়া দেন, বর্তমান সময়ে, চাহিদা, পরিবেশ সমাজ ব্যবস্থা দেখে। এই গুলা আলেমদের কাজ, আমরা সাধারণ মানুষ হয়ে কোন দিন একটা হাদিস বাংলায় পড়ে তার ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা নেই, যোগ্যতা ও নেই। সদকা ওয়াজিব, আর যাকাত ফরজ।