FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

আজকের তারাবীহ | পর্ব - ২২

আজকের তারাবীহ | পর্ব - ২২

*

আজকের তারাবীহ | পর্ব-২২

পবিত্র মাহে রামাদানের প্রতিদিনের খতম তারাবীহ সালাতে তেলাওয়াতকৃত আয়াত সমূহের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ ও আলোচনা নিয়ে এই আয়োজন।

#আজকের_তারাবীহ
#রামাদান_তারাবীহ_২২

সূরা হা-মীম সিজদাহ, আয়াত ৪৭ থেকে ৫৪

আল্লাহর জ্ঞান সর্বব্যাপী, কিয়ামাত কবে হবে তাও তিনিই জানেন।
পুনরুত্থানের পর কাফিররা তাদের মিথ্যা উপাস্যগুলোকে অস্বীকার করবে। মানুষ দুনিয়াবি কল্যাণ পেলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় না করে ভাবে এটা তার প্রাপ্য, আবার বিপদে পড়লে ঠিকই আল্লাহর কাছে দুআ করতে থাকে। বিশ্বজগতে ও মানুষের নিজেদের মধ্যে আল্লাহ এমন বহু নিদর্শন দেখাবেন যাতে স্পষ্ট হয়ে যায় যে এই দ্বীনই সত্য।

সূরা শুরা, আয়াত ১ থেকে ৫৩

সূরা শুরা'য় বলা হয়েছে, আসমানসমূহে ফেরেশতারা আল্লাহর তাসবীহ পাঠ ও দুনিয়াবাসীর জন্য ইস্তিগফার করায় এমনভাবে লিপ্ত আছেন যে আসমান ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়।
আল্লাহ চাইলে সকলকে জোরপূর্বক মুসলিম বানিয়ে দিতেন, কিন্তু এটা দুনিয়াবি পরীক্ষার পরিপন্থী হতো। ওয়াহী পাঠিয়ে তিনি জানিয়ে দেন যেন তাঁর সাথে শির্ক না করা হয়।
সৃষ্টি এবং রিযক বণ্টনের উপর আল্লাহর ক্ষমতা বর্ণিত হয়। নূহ, ইবরাহীম, মূসা, ঈসা (আঃ)-কে যে দ্বীন অনুসরণ করতে বলা হয়েছিলো, সেই একই দ্বীনের ব্যাপারেই মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে ওয়াহী দেওয়া হয়। মুশরিকরা বিভিন্ন মনগড়া ধর্মমত উদ্ভাবন করে একে খণ্ডবিখণ্ড করেছে।
যারা কিয়ামাতে বিশ্বাস করে না, তারা তা দ্রুত নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ করে। আর মুমিনরা কিয়ামাতের ব্যাপারে ভীত থাকে। আল্লাহ একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে না রাখলে কাফিরদের উপর ধ্বংস চলেই আসতো।
যে আখিরাতের ফসল চায়, আল্লাহ তাকে সেটিই বাড়িয়ে দেন। আর যে দুনিয়া চায়, আল্লাহ তাকে দুনিয়ারই কিছু অংশ দেন। রাসূল (সাঃ) দাওয়াতের কাজের বিনিময়ে কোনো পারিশ্রমিক চান না। তারপরও এতটুকু তো তাঁর পাওনা আছেই যে আত্মীয়তার মর্যাদা রক্ষা করে মুশরিকরা তাঁকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। তিনি মিথ্যা নবী হলে আল্লাহই তাঁর মিশনকে ব্যর্থ করে দিতেন।
আল্লাহ যদি সকল বান্দার জন্য রিযক অবারিত করে দিতেন, তারা অবাধ্যতায় লিপ্ত হতো। তিনি যাকে যতটুকু চান, ততটুকু রিযক দেন।
বড় বড় জাহাজ বানিয়ে চলাফেরা করা মানুষ আল্লাহ প্রদত্ত বাতাস ও বিপদআপদের সামনে কতটা অসহায়, তা তুলে ধরা হয়।
মুমিনদের কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়- কবিরা গুনাহ ও অশ্লীল কাজ পরিহার, রাগ উঠলে ক্ষমা করা, সালাত কায়েম, পরামর্শক্রমে কাজ করা, আল্লাহপ্রদত্ত রিযক হতে সৎকাজে ব্যয়, জুলুমকে প্রতিহত করা, সমপরিমাণ প্রতিশোধ নেওয়া বা ক্ষমা করা।
আখিরাতে কাফিরদের পরিণতি বর্ণনা করে সেই দিন আসার আগেই সাবধান হতে বলা হয়েছে। আল্লাহ যাকে চান তাকে পুত্র বা কন্যা দেন, কাউকে উভয়ই মিলিয়ে দেন, কাউকে বন্ধ্যা করেন। দুনিয়ায় মানুষকে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি যে তারা সরাসরি আল্লাহর সাথে কথা বলবে। ওয়াহী দ্বারা, কোনো পর্দার আড়াল থেকে বা বার্তাবাহক পাঠিয়ে তিনি তাঁর বার্তা জানান। আর এভাবেই রাসূল (সাঃ) এর প্রতি ইসলামের ব্যাপারে ওয়াহী পাঠানো হয়েছে।

সূরা যুখরুফ, আয়াত ১ থেকে ৮৯

সূরা যুখরুফে বলা হয়, কুরআন পূর্বে থেকেই লাওহে মাহফুজে সংরক্ষিত। মানুষের অবাধ্যতার কারণে আল্লাহ হিদায়াতের বাণী পাঠানো বন্ধ করবেন না। পূর্বেকার শক্তিশালীতর নাফরমান জাতিগুলোর ধ্বংসপ্রাপ্তির কথা স্মরণ করানো হয়। আসমান জমিন সৃষ্টি, জমিনে পথ তৈরি, বৃষ্টি বর্ষণ করে মৃত ভূমিকে পুনর্জীবিত করা, জড় ও জীব যানবাহনগুলোকে মানুষের অধীন করে দেওয়া- সবই আল্লাহর নিয়ামাত।
মুশরিকরা ফেরেশতাদের আল্লাহর কন্যা আখ্যায়িত করে পূজা করে, অথচ তাদেরকে আল্লাহ কন্যাসন্তান দান করলে মন খারাপ করে। তারা তাদের বাপদাদাদের এসব পূজা করতে দেখেছে বলে এটাকেই সঠিক মানে। পূর্বেকার মুশরিকরাও এই বাপদাদার অযৌক্তিক অজুহাতই হাজির করতো। আরবদের পূর্বপুরুষ ইবরাহীম (আঃ) মূর্তিপূজক ছিলেন না, বরং এর ঘোর বিরোধী ছিলেন।
কাফিররা আপত্তি করে বড় কোনো বিত্তশালীকে নবুওয়ত দেওয়া হলো না কেন। আল্লাহ জানিয়ে দেন পার্থিব বিত্ত বৈভব হকের মানদণ্ড নয়। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ একে অপরের সেবা নিয়ে একটি সুষম সমাজ গড়ে, এজন্যই আল্লাহ সম্পদে পার্থক্য রেখেছেন। সকলে কাফির হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকলে আল্লাহ কাফিরদের ঘরের ছাদ, দরজা, খাট, পালঙ্ক সোনারূপা দিয়ে গড়ে দিতেন। আখিরাতের দিন কাফিররা তাদের সঙ্গী শয়তানদের দেখে আফসোস করবে যে তাদের সাথে যদি দুনিয়ায় ঘনিষ্ঠতা না করতো!
ফিরআউন তার কওমকে বোকা বানানোর জন্য নিজের রাজত্ব আর মূসার (আঃ) গরিবির দিকে ইঙ্গিত করতো। আল্লাহপ্রদত্ত বালা-মুসিবত আসলে ঠিকই মূসাকে (আঃ) দুআ করতে বলতো।
ঈসা (আঃ) যে নিজেকে রব্ব দাবি করেননি, বরং আল্লাহর ইবাদাত করতে বলেছেন, তা বর্ণনা করা হয়। তাঁর আগমন কিয়ামাতের একটি আলামত। দুনিয়ার অন্তরঙ্গ বন্ধুরা কিয়ামাতের দিন পরিণত হবে শত্রুতে, তবে মুত্তাকীগণ ব্যতীত।
মুত্তাকীরা জান্নাতে বিবিধ নিয়ামাত ভোগ করবে। কাফিররা নিজেদের মৃত্যু কামনা করবে, কিন্তু তার বদলে অনন্তকাল তারা শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।
কাফিররা রাসূল (সাঃ) এর ব্যাপারে যে গোপন চক্রান্ত করতো, তা উন্মোচন করে দিয়ে সাবধান করা হয় যে আল্লাহর জ্ঞান থেকে কোনো কিছু আড়াল করা অসম্ভব।

সূরা দুখান, আয়াত ১ থেকে ৫৯

সূরা দুখানের শুরুতে কুরআন নাযিলের রাত্রি শবে কদর সম্পর্কে বলা হয়েছে।
মক্কার কাফিরদেরকে এক চরম দুর্ভিক্ষ দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এমনকি তারা ক্ষুধার জ্বালায় চামড়া খেতো এবং আসমানকে ধোঁয়ার মতো দেখতো। রাসূল (সাঃ)-কে তারা দুআ করতে বলে এবং বিপদ সরে গেলে ঈমান আনার প্রতিশ্রুতি দেয়। রাসূল (সাঃ) তা করেন, কিন্তু এরপর কাফিররা ঈমান আনেনি। আল্লাহ তাদেরকে আখিরাতের স্থায়ী আযাবের ব্যাপারে জানিয়ে দেন।
ফিরআউনের কওমের ধ্বংস হওয়ার বিবরণ দেওয়া হয়। তারা তাদের কত বাগান, প্রস্রবণ, শস্যক্ষেত্র আর সুরম্য অট্টালিকা ফেলে রেখে ধ্বংস হয়ে গেলো, যা অন্য জাতি ভোগ করলো। তাদের জন্য না আসমান কাঁদলো, না জমিন কাঁদলো।
এছাড়া তুব্বার সম্প্রদায়ের ধ্বংস হওয়ার দৃষ্টান্ত পেশ করা হয়। তুব্বা ইয়ামানের রাজাদের উপাধি। তাদের কোনো এক রাজা মূসা (আঃ) এর দ্বীনের অনুসারী ছিলেন, কিন্তু তৎপরবর্তী লোকেরা শির্কে লিপ্ত হয়ে আযাবে ধ্বংস হয়।
বিচারদিবসের অস্তিত্ব না থাকলে সমগ্র সৃষ্টিজগত এক অনর্থক লীলাখেলা হতো। কিন্তু আল্লাহ একে যথাযথ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন।
কাফিররা যাক্কুম গাছ ও তপ্ত পানির আযাব ভোগ করবে, সেই সাথে তাদের দুনিয়াবি প্রতিপত্তির কথা স্মরণ করিয়ে খোঁটা দেওয়া হবে। আর মুত্তাকীরা জান্নাতি পোশাক পরে ডাগর চোখের হুরদের সাথে অনন্তকাল জান্নাতি উদ্যানরাজি ও প্রস্রবণে থাকবে।

সূরা জাসিয়া, আয়াত ১ থেকে ৩৭

সূরা জাসিয়ার শুরুতে আসমান ও জমিনে ছড়ানো আল্লাহর বিভিন্ন নিদর্শন নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে বলা হয়। মানুষ ও পশুপাখির সৃষ্টি, রাতদিনের আসাযাওয়া, বৃষ্টি, ফসল, বায়ু, সাগর, নৌযান- সবই আল্লাহর নির্দেশে মানুষের খেদমতে নিয়োজিত।
আল্লাহর আয়াতকে ঠাট্টা বিদ্রুপকারীদের চরম শাস্তির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এদের প্রতিশোধ না নিতে বলা হয় এবং আল্লাহর হাতে এদের ফলাফল ছেড়ে দিতে বলা হয় (মাক্কি যুগে)।
বনী ইসরাইলকে কিতাব, রাজত্ব ও নবুওয়তের মতো দৌলব দেওয়ার পরও তারা নিজেদের মাঝে শত্রুতা করে বিভিন্ন মতভেদ সৃষ্টি করেছে।
জালিমগণ একে অন্যের বন্ধু। আর আল্লাহ মুত্তাকীদের বন্ধু। আখিরাত অস্বীকারকারীদের মতে ভালো-খারাপ সকলের পরিণতি একই, মরে গেলে সব শেষ। সৃষ্টির যথাযথ উদ্দেশ্য বর্ণনা করে তাদের এ অযৌক্তিক বিশ্বাস খণ্ডন করা হয়।
কিয়ামাত দিবসে কাফিরদের অবস্থার ভয়াবহ বর্ণনা দেওয়া হয়।


কার্টেসি : হুজুর হয়ে ফেসবুক পেজ

*




0 Comments 202 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024