FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

আজকের তারাবীহ | পর্ব - ২১

আজকের তারাবীহ | পর্ব - ২১

*

আজকের তারাবীহ | পর্ব-২১

পবিত্র মাহে রামাদানের প্রতিদিনের খতম তারাবীহ সালাতে তেলাওয়াতকৃত আয়াত সমূহের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ ও আলোচনা নিয়ে এই আয়োজন।
#আজকের_তারাবীহ
#রামাদান_তারাবীহ_২১

সূরা যুমার, আয়াত ৩২ থেকে ৭৫
আল্লাহপ্রদত্ত সত্যকে প্রত্যাখ্যানকারীরা থাকবে জাহান্নামে। অন্যদিকে মুত্তাকীদের মন্দ কাজ মাফ করে দিয়ে উত্তম কাজের পুরষ্কার দেওয়া হবে। কাফিররা মুসলিমদেরকে আল্লাহ ছাড়া অন্যদের ভয় দেখায়। অথচ ক্ষতি ও অনুগ্রহ করার মালিক কেবল আল্লাহ।
ঘুমের সময় সাময়িকভাবে এবং মৃত্যুর সময় স্থায়ীভাবে মানুষের রুহ আল্লাহর হুকুমেই কবয হয়।
দেবদেবীদেরকে আল্লাহর নিকট সুপারিশকারী মনে করার শির্কি বিশ্বাসকে খণ্ডন করা হয়।
মুশরিকরা আল্লাহকে বিশ্বাস করলেও তাদের সামনে আল্লাহর কথা বলা হলে বিরক্ত হয় আর দেবদেবীদের আলোচনা করলে খুশি হয়। আখিরাতে তারা দুনিয়ার সব সম্পদ মুক্তিপণ দিয়ে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচতে চাইবে। অথচ দুনিয়ায় তারা এসব সম্পদের জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখায় না।
বান্দা যত গুনাহ করুক, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে মানা করা হয়। শাস্তি চলে আসার আগেই আল্লাহ অভিমুখী হতে বলা হয় যাতে সময় চলে যাওয়ার পর আফসোস না করা লাগে।
কিয়ামাতের দিন আসমান জমিন আল্লাহর হাতের মুঠিতে থাকা (যেরকম 'হাত' আল্লাহর শানের উপযুক্ত, সেরকম হাত। এর কোনো স্বরূপ প্রকৃতি আমাদের পক্ষে জানা অসম্ভব), মাখলুকদের মূর্ছা যাওয়া, আমলনামা পেশ করা ইত্যাদি ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়।
কাফিরদেরকে জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করা হবে তাদের কাছে কি কোনো সতর্ককারী (নবী) আসেনি। তারা বলবে হ্যাঁ এসেছিলো, কিন্তু তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো।
মুত্তাকীদেরকে জান্নাতের দিকে নিয়ে ফেরেশতারা সালাম জানাবেন। মুত্তাকীরা আল্লাহর প্রশংসা ঘোষণা করবে। ফেরেশতাগণ আল্লাহর আরশ ঘিরে তাঁর প্রশংসা সহকারে তাসবীহ পড়বেন।

সূরা মুমিন, আয়াত ১ থেকে ৮৫

সূরা মুমিনের শুরুতে কুরআন নাযিলকারী আল্লাহর কতিপয় বৈশিষ্ট্য বলা হয়- মহাক্ষমতাবান, সর্বজ্ঞ, ক্ষমাকারী, তাওবা কবুলকারী, কঠিন শাস্তিদাতা, সর্বশক্তিমান। কাফিরদের দুনিয়াবি আয়েশি জীবন দেখে বিভ্রান্ত হতে মানা করা হয়। নূহ (আঃ) এর সম্প্রদায় ও তৎপরবর্তী অনেক জাতিই নবীকে অস্বীকার করে আযাবে ধৃত হয়। আরশ বহনকারী ও এর আশপাশের নিকটবর্তী ফেরেশতারা মুমিনদের জন্য মাগফিরাতের দুআ করেন।
আখিরাতে কাফিরদেরকে বলা হবে- আজ তাদের নিজেদের উপর যত রাগ হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি রাগ আল্লাহর হতো যখন তারা দুনিয়ায় তাঁর আয়াত অস্বীকার করতো। আজ বাঁচার কোনো পথ নেই। দুনিয়ায়ও আল্লাহই রিযক দেন। খালেসভাবে তাঁরই আনুগত্য করতে হবে। কিয়ামাতের দিন আল্লাহ ছাড়া আর কারো রাজত্ব থাকবে না। চোরা চাহনি ও বক্ষে গোপন করা কথারও বিচার হবে।
এখন যারা কুফরি করছে, তাদের চেয়ে শক্তি ও কীর্তিতে অগ্রগামী অনেক জাতিই কুফরি করে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। যেমন- ফিরআউন, হামান, কারুন ও তাদের লস্কর। ফিরআউনের দরবারের এক ব্যক্তি নিজের ঈমান গোপন রেখেছিলেন। মূসা ও বনী ইসরাইলের (আঃ) প্রতি অত্যাচারের হুমকি এবং আল্লাহর দ্বীন নিয়ে ফিরআউনের মশকরা শুনে তিনি কথা বলে উঠেন।
তাওহীদের ব্যাপারে অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ভাষণ দেন। পূর্বেকার ধ্বংসপ্রাপ্ত কাফিরগোষ্ঠীগুলোর কথা বলেন। আল্লাহর শাস্তির ভয় দেখান। ফিরআউনের চক্রান্ত থেকে আল্লাহ সে মুমিনকে রক্ষা করেন। বারযাখের জীবনে কাফিরদেরকে তাদের গন্তব্য জাহান্নাম দেখানো হবে। জাহান্নামে কাফির নেতা ও অনুসারীরা পরস্পরকে দোষারোপ করবে। রক্ষী ফেরেশতাদের তারা বলবে আল্লাহর কাছে দুআ করে একদিনের আযাব কমিয়ে দিতে। ফেরেশতারা বলবেন, তোমরাই দুআ করো, কাফিরদের দুআ তো নিষ্ফলই হয়।
দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ মুমিনদের সাহায্য করেন। কাফিরদের উৎপীড়নে ভ্রূক্ষেপ না করে ইস্তিগফার, তাসবীহ পাঠ করতে বলা হয়। মুশরিকরা এটা বিশ্বাস করতো যে আসমান-জমিন আল্লাহর সৃষ্টি। অথচ কিয়ামাতের দিন তিনি মানুষকে পুনরুত্থিত করবেন, এটা তাদের বিশ্বাস হয় না। এই দ্বিমুখিতাকে খণ্ডন করা হয়।
রাতদিনের আবর্তন, আসমান-জমিন সৃষ্টি, রিযক প্রদান, মানুষের সৃষ্টি-জন্ম-বৃদ্ধি, জন্ম-মৃত্যু সবই আল্লাহ নিয়ন্ত্রণ করেন। তাঁর ইবাদাত খালেসভাবে করতে হবে, মিথ্যা উপাস্যদের মানা যাবে না।
কিয়ামাতের দিন কাফিরদেরকে শাস্তি দিতে দিতে তাদের উপাস্যগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। শাস্তি থেকে বাঁচতে তারা মিথ্যা কথা বলবে যে কোনো উপাস্যকে তারা ডাকতো না।
আল্লাহর নিয়ামাত গবাদি পশু ও যানবাহনের কথা স্মরণ করানো হয়। পূর্বেকার অধিক শক্তিশালী কাফির জাতিগুলোর পরিণামের কথা স্মরণ করানো হয়। কোনো নবীই আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেবল কাফিরদের আবদার রক্ষার্থে মুজিযা দেখাতেন না। সুস্পষ্ট আযাব দেখার পর অনেকে ঈমান আনে, কিন্তু তখন তা গ্রহণযোগ্য হয় না।

সূরা হা-মীম সিজদাহ, আয়াত ১ থেকে ৪৬

সূরা হা-মীম সিজদাহ (অপর নাম সূরা ফুসসিলাত)-তে বলা হয় কুরআন হলো সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। কাফিররা রাসূল (সাঃ) এর দাওয়াহ শুনতে চায় না। রাসূল (সাঃ) আমাদেরই মতো মানুষ, শুধু তাঁর কাছে ওয়াহী পাঠানো হয়। এক আল্লাহর ইবাদাত করতে, তাওবা করতে ও যাকাত দিতে বলা হয়।
আল্লাহ কর্তৃক আসমান-জমিন ও এতে বিদ্যমান নিয়মকানুন, তারকারাজি, পাহাড়, রিযক সৃষ্টির বর্ণনা দেওয়া হয়। আদ ও সামুদ জাতির কথা বলা হয় যাদের কাছে সর্বপন্থায় নবীগণ দাওয়াত পৌঁছেছেন। তারা ঠাট্টা করতো যে ফেরেশতার বদলে মানুষ কেন নবী হলো। নিজেদের শক্তিমত্তা নিয়ে গর্ব করতো, অথচ তাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অবাধ্য হতো। ফলে তাদের উপর আযাব আসলো।
কিয়ামাতের দিন পাপীদের চামড়া ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তাদের পাপের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবে। আল্লাহর হুকুমে এসব অঙ্গ কথা বলছে দেখে তারা বিস্মিত হয়ে যাবে। আল্লাহর ক্ষমতার ব্যাপারে দুনিয়ার জীবনে ভুল ধারণা পোষণ করতো বলেই তো আজ তাদের এ পরিণতি হলো। তাদের সহচর শয়তানেরা তাদের এসব কাজে উদ্বুদ্ধ করতো।
কাফিররা কিয়ামাতের দিন সেসব জিন ও মানুষকে খোঁজ করবে, যারা তাদেরকে বিপথগামী করেছিলো। তাদেরকে পায়ের নিচে দলিত করতে চাইবে। অপরদিকে যারা আল্লাহর ইবাদাতে একনিষ্ঠ ছিলো, তাদের প্রতি ফেরেশতা নাযিল হয়ে অভয় দেয়, দুনিয়া ও আখিরাতের ব্যাপারে সুসংবাদ শোনায়।
তা
র কথাই সবচেয়ে উত্তম যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নেক আমল করে এবং নিজেকে মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত বলে। মন্দকে ভালো দিয়ে মোকাবেলা করতে বলা হয়, তাহলে শত্রুও বন্ধু হয়ে যায়। রাত-দিন, চন্দ্র-সূর্য কেবল আল্লাহর নিদর্শন, এদের সেজদা না করে এদের সৃষ্টা আল্লাহকে সেজদা করতে বলা হয়। আরেকটি নিদর্শন হলো মৃত ভূমিতে বৃষ্টির মাধ্যমে প্রাণ সঞ্চার, এভাবে মৃত মানুষদেরও পুনরুত্থিত করা হবে।
কাফিররা দাবি করে আরব নবীর মুখে অনারবী ভাষায় কুরআন নাযিল হলে সেটা একটা মুজিযা হতো, তারা তা দেখে ঈমান আনতো। আল্লাহ জানিয়ে দেন এখন যেমন তারা ঈমান না আনার ব্যাপারে অজুহাত দিচ্ছে, তখনও অজুহাত দিতো যে অনারবী ওয়াহী তারা বুঝতে পারছে না।



কার্টেসি : হুজুর হয়ে ফেসবুক পেজ

*




0 Comments 151 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024