FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

আজকের তারাবীহ | পর্ব-১৪

আজকের তারাবীহ | পর্ব-১৪

*

আজকের তারাবীহ | পর্ব-১০

পবিত্র মাহে রামাদানের প্রতিদিনের খতম তারাবীহ সালাতে তেলাওয়াতকৃত আয়াত সমূহের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ ও আলোচনা নিয়ে এই আয়োজন।

[b] #আজকের_তারাবীহ

#রামাদান_তারাবীহ_১৪

সূরা আম্বিয়া, আয়াত ১ থেকে ১১২

কাফিররা নিজেদের মাঝে বলাবলি করতো আল্লাহ কেন নবী বানিয়ে পাঠানোর জন্য একজন মানুষকেই পেলেন! তাদের এই গোপন কানাকানির জবাবও আল্লাহ ওয়াহী নাযিল করে জানিয়ে দেন যে পূর্ববর্তী নবীগণও মানুষই ছিলেন। আহলে কিতাবগণও এ ব্যাপারে সাক্ষী। আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করার কারণেই আগের জাতিগুলো ধ্বংস করে নতুন জাতি আনা হয়েছে। এরাও সীমালঙ্ঘন করলে একই পরিণতি হবে।

আল্লাহ উদ্দেশ্যহীনভাবে এ সৃষ্টিজগত তৈরি করেননি।

মুশরিকরা বলতো একদিন না একদিন তো রাসূল (সাঃ) মারা যাবেন, তখন তারা উল্লাস করবে। তো তারা নিজেরা কি চিরকাল বেঁচে থাকবে নাকি? সকলেই তো মৃত্যুর স্বাদ পেয়ে বিচারের মুখোমুখি হবে।

একাধিক ইলাহ থাকলে সকলেই ধ্বংস হয়ে যেতো। এক ইলাহ'র ব্যাপারে পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে দলীল আছে। আর শির্কের পক্ষে কোনো দলীলই নেই। নবী ও ফিরিশতাগণকে যারা উলুহিয়াতের অংশীদার ভাবে, তাদের কথা খণ্ডন করে বলা হয় এঁরাও আল্লাহরই বান্দা। এদের কেউ যদি নিজেকে ইলাহ দাবি করেও বসতেন, তাঁকেও আল্লাহ জাহন্নামে দিতেন।
মানুষের উপর আল্লাহর বিবিধ নিয়ামাত পাহাড়, আসমান, চাঁদ, সূর্য, রাত, দিনের আবর্তনের কথা স্মরণ করানো হয়েছে।

মুশরিকরা তাদের মিথ্যা ইলাহর সমালোচনা সহ্য করে না। অথচ নিজেরা ঠিকই আল্লাহর সিফাতি নামগুলো শুনলে রেগে যায়।

পূর্বের নবীগণকেও ঠাট্টা বিদ্রুপ করা হয়েছে। বিদ্রুপকারীরা নিজেরাই তার ফল ভোগ করেছে।

তাওহীদের দাওয়াত ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে মুশরিকদের প্রতিপত্তি ক্রমশ কমে আসছে, এই বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে তাদের সাবধান করা হয়।
কিয়ামাতের দিন মীযান স্থাপন করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আমলও পরিমাপ করা হবে।
ইবরাহীম (আঃ) এর কাহিনী বিধৃত হয়। তিনি তাঁর কওমের মূর্তিপূজার বিরোধিতা করেন। মুশরিকরা এক উৎসবের দিনে লোকালয় থেকে দূরে গেলে ইবরাহীম (আঃ) তাদের বড় মূর্তিটা ছাড়া বাকিগুলো ভেঙে ফেলেন। তারা ফিরে এসে দেখলে ইবরাহীম (আঃ)-কেই সন্দেহ করে। তিনি বলেন বড় মূর্তিকে জিজ্ঞেস করে দেখতে এ কাজ কে করেছে। এতে মুশরিকরা বিব্রত হয়ে যায়। অনেক আয়োজন করে ইবরাহীম (আঃ)-কে অগ্নিকুণ্ডে ফেলা হয়। আল্লাহর নির্দেশে আগুন স্বস্তিদায়ক ঠাণ্ডা হয়ে যায়।

ইবরাহীম (আঃ) ও তাঁর ভাতিজা লূত (আঃ)-কে তাঁদের জালিম কওমের থেকে বাঁচিয়ে আল্লাহ তাঁদের শাম-ফিলিস্তিন ভূমিতে নিয়ে যান এবং নেক সন্তান দ্বারা পুরষ্কৃত করেন।

নূহ (আঃ) ও মুমিনগণকেও আল্লাহ নিমজ্জিত হওয়া থেকে রক্ষা করেন।
দাউদ ও সুলাইমান (আলাইহুমাসসালাম) উভয়কে আল্লাহ বিচারিক প্রজ্ঞা দিয়েছেন। একবার এক মেষপালকের মেষ এক কৃষকের ক্ষেতের ক্ষতি করে। দাউদ (আঃ) রায় দেন মেষপালক ক্ষতির সমমূল্যের মেষ কৃষককে দেবে। সুলায়মান (আঃ) রায় দেন যে, কৃষক মেষপালকের মেষগুলো লালন করবে ও তার দুধ থেকে উপকৃত হবে। আর মেষপালক কৃষকের জমি পরিচর্যা করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে। তারপর উভয় নিজ নিজ সম্পদ বুঝে নিবে। এই উভয় বিচারই সঠিক ছিলো বলে আল্লাহ প্রশংসা করেন।

দাউদ (আঃ) এর কণ্ঠের সাথে পাহাড় ও পাখিরাও আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করতো। এছাড়া আল্লাহ দাউদের হাতে লোহাকে মোমের মতো নমনীয় করে দিতেন, ফলে তিনি সুচারুভাবে লৌহবর্ম বানাতেন। আল্লাহ সুলায়মান (আঃ) এর জন্য বাতাস ও কিছু দুষ্ট জিনদেরকে অনুগত করে দেন। বাতাস তাঁকে নিয়ে সহজে সফর করাতো আর জিনেরা তাঁর জন্য ডুবুরির কাজ করতো।
আইয়ুব (আঃ) এর ভয়ানক রোগ হয়ে পরিবার-সম্পদ সব হারালে তিনি অত্যন্ত নম্র ভাষায় আল্লাহর কাছে দুআ করেন। আল্লাহ তাঁকে সুস্থ করে আগের চেয়েও বেশি নিয়ামাত ফিরিয়ে দেন।

ইসমাইল, ইদরীস ও যুলকিফল আলাইহিমুসসালাম ছিলেন আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত।

ইউনুস (আঃ) আল্লাহর অনুমতির আগেই তাঁর কওমকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় ঘটনাক্রমে মাছের পেটে যান। সেই অন্ধকারে তিনি আল্লাহর কাছে দুআ করলে আল্লাহ তাঁকে নাজাত দেন।

আল্লাহ যাকারিয়া (আঃ)-কে বৃদ্ধ বয়সে সন্তান ইয়াহইয়া (আঃ) দান করেন। সতীত্ব রক্ষাকারী মারইয়াম (আঃ)-কে রুহ ফুঁকে দিয়ে ঈসা (আঃ) এর জন্মের ব্যবস্থা করেন।

এভাবে আল্লাহ যুগে যুগে নেক বান্দাবান্দীদের সম্মানিত করেছেন। এঁরা সকলে একই দ্বীন ইসলামের অনুসারী ছিলেন। কাফিররা সেই দ্বীনকে খণ্ডবিখণ্ড করে নতুন নতুন মতাদর্শ উদ্ভাবন করেছে। কিয়ামাতের দিন বইপত্রের মতো পৃথিবীকে গুটিয়ে ফেলা হবে। কাফিররা তাদের মিথ্যা উপাস্যসহ জাহান্নামে থাকবে। যাবুরে লেখা ভবিষৎবাণী বাস্তবায়িত হবে যে আল্লাহ শেষ পর্যন্ত মুমিনদেরকেই সৃষ্টিজগতের নিয়ামাতরাজির অধিকারী বানাবেন। তারা জান্নাত থেকে কাফিরদের কষ্টের মৃদু আওয়াজও শুনবে না, ফলে বিচলিতও হবে না। দুনিয়ায় কাফিরদেরকে এসকল সাবধানবাণী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হলো।

সূরা হাজ্জ, আয়াত ১ থেকে ৭৮

সূরা হাজ্জ শুরু হয়েছে কিয়ামাত দিবসের অন্তর কাঁপিয়ে দেওয়া বর্ণনার মাধ্যমে। আল্লাহ দুনিয়াতে যেভাবে নিষ্প্রাণ ভ্রূণ ও শুষ্ক মাটি থেকে মানুষ ও ফসল বের করে আনেন, তার উদাহরণ দিয়ে বোঝানো হয়েছে আখিরাতের পুনরুত্থান বাস্তব।

সুবিধা পেলে আল্লাহর ইবাদাত করে আর অসুবিধা দেখলে কুফরে ফিরে যায় এরকম ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত।

সমগ্র সৃষ্টিরাজি আল্লাহকেই সেজদা করে। মুমিন, ইহুদী, নাসারা, সাবী, অগ্নিপূজক, মূর্তিপূজক সকলের ব্যাপারে আল্লাহ কিয়ামাতের দিন ফায়সালা করে দিবেন। কাফিরদের জন্য প্রস্তুতকৃত জাহান্নামের শাস্তির ভয়াবহ বর্ণনা দেওয়া হয়। মুমিনদের জন্য জান্নাতের নিয়ামাতের মনোলোভা বর্ণনা দেওয়া হয়।

আল্লাহর নির্ধারিত পবিত্র স্থানে ইবরাহীম (আঃ) কা'বা নির্মাণ করেন। আল্লাহ একে মূর্তি থেকে পবিত্র রাখার জন্য এবং মুসলিমদের হাজ্জের জন্য পবিত্র রাখার নির্দেশ দেন। হাজ্জ, কুরবানি, কুরবানির পশুর ব্যবহার, আল্লাহর নাম নিয়ে জবাহ করা, গোশত খাওয়া ও ফকির মিসকীনদের খাওয়ানো সংক্রান্ত বিবিধ নিয়ম বর্ণিত হয়। আল্লাহর কাছে এসবের রক্ত-মাংস পৌঁছে না, পৌঁছে আমাদের তাকওয়া।

জিহাদের অনুমতি দিয়ে প্রাথমিক আয়াত নাযিল হয়। এই ইবাদাতের দ্বারাই মুজাহিদদের হাতে জালিমদের ধ্বংস করার মাধ্যমে বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের সংঘটন প্রতিরোধ করা যায়। এসকল নেক লোকদেরকে আল্লাহ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করলে তারা ন্যায়পূর্ণ সমাজ কায়েম করবে। পূর্বের নবীদেরকেও অস্বীকার করা হয়েছিলো। ফলে অস্বীকারকারীরা আযাবে ধ্বংস হয়ে যায়। এভাবে কত কূয়া এবং বাসস্থান এখন বিরান পড়ে আছে। জালিমরা যেন এসব দেখে শিক্ষা নিয়ে সংশোধন হয়ে যায়।

কিয়ামাতের দিন মুমিন ও কাফিরদের মাঝে আল্লাহ চূড়ান্ত ফায়সালা করে দিবেন।

যেসকল মুহাজিরকে উৎপীড়ন করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে, তাঁদের আখিরাতের চমৎকার প্রতিদানের কথা বর্ণিত হয়েছে। সৃষ্টিজগতের উপর আল্লাহর সর্বব্যাপী ক্ষমতার বর্ণনা দিয়ে প্রমাণ করা হয়েছে আল্লাহর পক্ষে তা সহজ।

মুহাম্মাদ (সাঃ) এর শরিয়তের কিছু ইবাদাতের বিধান পূর্ববর্তী নবীদের কিছু বিধান থেকে আলাদা। কাফিররা এটা দেখিয়ে ভুল ধরার চেষ্টা করতো। আল্লাহ জানিয়ে দেন যে আল্লাহই এ বিধান করেছেন। আল্লাহর হুকুমেই কোনো একটা নিয়ম ইবাদাতের পদ্ধতি বলে গণ্য হয়, নাহলে এগুলো তো সত্ত্বাগতভাবে পবিত্র কিছু নয়।

কাফিররা যেসবের উপাসনা করে তারা সকলে মিলে একটা মাছি তৈরি করতে পারে না, এমনকি মাছি তাদের থেকে কিছু নিয়ে গেলে তারা তা রোধ করতে পারে না। উপাস্য ও উপাসক উভয়ই দুর্বল।

মুশরিকরা কুরআনের এসব কথা শুনে রেগে গিয়ে তেড়ে আসতে চায়। তাদেরকে তাই এরচেয়েও অপছন্দের বিষয় শুনিয়ে দেওয়া হয়- জাহান্নামের আগুন।

মুমিনদের বলা হয় সালাত পড়তে, ইবাদাত করতে, নেক আমল করতে এবং যেভাবে জিহাদ করা উচিত সেভাবে জিহাদ করতে।


কার্টেসি : হুজুর হয়ে ফেসবুক পেজ

*




0 Comments 152 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024