FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

কিছু শিক্ষনীয় মুভির নাম বলেন, যা দেখে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারি?( বাংলা মুভি)

কিছু শিক্ষনীয় মুভির নাম বলেন, যা দেখে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারি?( বাংলা মুভি)

*

আগন্তুক -সত্যজিৎ রায়। ( আমার মতে শ্রেষ্ঠ বাংলা সিনেমা। মানুষ ও পরিচালক হিসেবে পরিপক্ব সত্যজিৎ এই সিনেমায় তথাকথিত স্বঘোষিত 'সভ্য' মানুষদের সাথে তাদেরই ভাষায় 'অসভ্য' মানুষদের তুলনা করেছেন৷ কারা বেশি মানবিক? এই সুতীব্র প্রশ্ন তিনি ছুঁড়ে দিয়েছেন আমাদের প্রতি)।

অশনিসংকেত- সত্যজিৎ রায়। (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ্বের পটভূমি নিয়ে তৈরি সিনেমা। যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়, মানুষের দ্বিচারিতা, সৎ ও আদর্শবান মানুষদের সংকট তুলে ধরা হয়েছে)

জলসাঘর -সত্যজিৎ রায়। ( বাংলায় আবহমানকাল ধরে চলে আসা জমিদারী প্রথা ক্ষয়িষ্ণু হতে থাকলে জমিদারদেরও প্রভাব প্রতিপত্তি কমতে শুরু করে, কিন্তু ঐতিহ্য, শখ, জমিদারি ঠাট বজায় রাখতে এমনই ক্রমাগত প্রভাব প্রতিপত্তি হারাতে থাকা এক জমিদারের আপ্রাণ চেষ্টা ও অবশেষে তার লজ্জাজনক পরিনতি সত্যজিৎ বাবু তুলে ধরেন এই জলসাঘর এ)

জীবন থেকে নেয়া -জহির রায়হান। (স্বাধীনতা পূর্ববর্তী বাংলাদেশি মধ্যবিত্ত সমাজের কাহিনী, একটি পরিবার ও সেই পরিবারের নানান পেশার সদস্যগণের অভিজ্ঞতায় পুরো দেশের উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে)।

রানওয়ে- তারেক মাসুদ। ( রাজনৈতিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক নেতাদের সুবিধাবাদিতা, পারিবারিক অভাব ও হতাশা কীভাবে একজন সদ্য কৈশোর পেরোনো তরুণকে জংগীবাদের দিকে ঠেলে দেয় তাই এই সিনেমার উপজীব্য)।

মাটির ময়না- তারেক মাসুদ। ( কুসংস্কার আচ্ছন্ন বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার স্বরূপ, একজন শিক্ষিত ও আধুনিক মানুষের হঠাৎ করে ধর্মান্ধ আচরণ শুরু করা এবং তার প্রভাব তাঁর পরিবারের সদস্যদের উপর কীভাবে পড়ে পরিচালক অত্যন্ত নিপুণভাবে এই সিনেমায় তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ পরিচালক তারেক মাসুদ এই সিনেমাটিতে মূলত নিজের কৈশোরকেই তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে। সিনেমাটি ২০০২ সালে প্রথম কোনো বাংলাদেশি সিনেমা হিসেবে অস্কারে মনোনয়ন পায়)।

আগুনের পরশমনি- হুমায়ুন আহমেদ। ( পরিচালক হিসেবে হুমায়ুন আহমেদের প্রথম তৈরি চলচ্চিত্র। মুক্তিযুদ্ধকালে ঢাকার একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ও একজন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে)।

শ্যামল ছায়া-হুমায়ুন আহমেদ। ( মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা। একটি নৌকায় করে কিছু নিরীহ মানুষের প্রাণভয়ে যুদ্ধরত এলাকা থেকে কিছুটা নিরাপদ এলাকায় আশ্রয় খোঁজার চেষ্টার সুনিপুণ চিত্রায়ন। যুদ্ধের বিভীষিকা, রাজাকারদের নৃশংসতা, আধুনিক রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা না রাখা গ্রামের নিতান্ত সাধারণ মানুষেরাও কীভাবে যুদ্ধের ভয়াবহতার শিকার হন তা হুমায়ুন আহমেদ এই চলচ্চিত্রে তুলে ধরেন। শক্তিমান দুই প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদী এবং চ্যালেঞ্জার এর দুর্দান্ত অভিনয়)

অজ্ঞাতনামা -তৌকির আহমেদ। ( বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করা লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি অভিবাসীদের পরিবার ছেড়ে দীর্ঘ সময় কাটানো, রাষ্ট্রকর্তৃক বঞ্চনা অবহেলা,এমনকি কর্মরত অবস্থায় বিদেশে মৃত্যু হলেও তাদের পরিবারের কাছে মৃতদেহ পর্যন্ত পৌছানোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় অবহেলা ; অজ্ঞাতনামা সিনেমার সারাংশ আমার দৃষ্টিতে এই। অনেকের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র)

পদ্মানদীর মাঝি- গৌতম ঘোষ ( মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস পদ্মানদীর মাঝি অবলম্বনে তৈরি। বিস্তীর্ণ পদ্মার পাড়ে শত শত বছর ধরে বাস করা দরিদ্র জেলেদের জীবনোপাখ্যান। অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ ও অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলি'র অসাধারণ অভিনয়)।

মনের মানুষ — গৌতম ঘোষ। ( কবি ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে মরমী সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র । ধর্ম বর্ণের উর্ধে মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় যে সে মানুষ, তা এই সিনেমাতে ফুটে ওঠে)।

মেঘে ঢাকা তারা — ঋত্বিক ঘটক। ( ৪৭ এ দেশভাগের দ্বারা কলকাতায় শরণার্থী হিসেবে যাওয়া এক মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি মেয়ের জীবন সংগ্রামের গল্প। পরিবার ও ভালোবাসার মানুষের জন্য হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে নিজে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া এবং শেষে পরিবারের সদস্যদের দ্বারা অবহেলার শিকার হওয়া একইসাথে ভালোবাসার মানুষ কর্তৃক প্রতারিত হওয়া এক তরুণীর করুণ অবস্থার সুনিপুণ চিত্রায়ণ মৃণাল সেনের)

সুবর্ণ রেখা -ঋত্বিক ঘটক। ( দেশভাগের ফলে উদ্ভূত শরণার্থী সমস্যা এই সিনেমার মূল উপজীব্য। রাজনৈতিক নেতাদের অবিমৃষ্যকারীতায় রাষ্ট্রের নিম্নবিত্তের দরিদ্র ও সাধারণ মানুষেরা কীভাবে ভুক্তভোগী হন, করুণ পরিণতি বরন করেন তাই আমাদেরকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন ঋত্বিক)

আকালের সন্ধানে — মৃণাল সেন।

পলাশী থেকে ধানমন্ডি -আব্দুল গাফফার চৌধুরী। ( বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবারবর্গের হত্যাকাণ্ড ও তার পূর্ববর্তী বিভিন্ন ঘটনাবলিকে তুলে ধরা হয়েছে সিনেমাটিতে। আজীবন লেখক সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা গাফফার চৌধুরী যদিও সিনেমার সেট, কলাকুশলী নির্বাচন ইত্যাদিতে অনভিজ্ঞতারই পরিচয় দিয়েছেন, তবে এই সিনেমাটি বহুকাল মানুষ দেখবেন কেবল এতে ফুটিয়ে তোলা ইতিহাসের জন্য)।

অনুরণন -অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। ( আধুনিক ও শিক্ষিত মানুষদের জীবনের নানান অপ্রাপ্তি, স্বার্থের দ্বন্দ্ব ইত্যাদি এই সিনেমার উপজীব্য)।

*




0 Comments 363 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024