FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

প্রসঙ্গ ঃ সঠিক সময়ে সঠিক মানুষকে বিয়ে করা ।

প্রসঙ্গ ঃ সঠিক সময়ে সঠিক মানুষকে বিয়ে করা ।

*

আজকাল বেশির ভাগই দেখা যায় একটি ছেলে যখন বিয়ে করে তখন তার বয়স হয় ৩৫ বা ৪০ বছর। তখন সে ১৯/২০ বছরের একটা মেয়েকে বিয়ে করে। ছেলেটি বা তার বাড়ির লোক বয়সের তফাতটা একবার চিন্তা করার প্রয়োজন মনে করে না।১৫ বা ২০ বছর এর ছোটো মেয়েকে নির্দ্বিধায় বিয়ে করে নেয়।

কারণ ছেলেটি মনে করে ,এই ৩৫/৪০ বছর বয়স পর্যন্ত অনেক পরিশ্রম করে প্রতিষ্ঠিত করেছে , সুতরাং তার নিজের বয়সের সাথে মানানসই ২৫ /৩০ বছরের মেয়েকে ( তার কথায় বুড়িকে ) বিয়ে করে নিজের জীবন নষ্ট করবে না।
অপরদিকে মেয়েদের ক্ষেত্রে সমস্যা টা একটু আলাদা রকম । একটি মেয়ের যখন ১৮/২০ বছরে বিয়ে হয়ে যায়, তখন তার সাথে মানানসই প্রতিষ্ঠিত ২৫ বছরের পাত্র পাওয়া কোনো ভাবেই সম্ভব হয় না। কারণ ২৫ বছরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সবাই পারে না। আর মেয়েটিও প্রতিষ্ঠিত ছেলে ছাড়া বিয়ে করবে না। তাই মেয়েটির বিয়ে ৩৫/৪০ বছরের পরিনত পুরুষ এর সাথেই হয়। বয়সের দিক থেকে মানানসই পাত্র সে পায় না। বয়সের পার্থক্য সেখানেও ১৫/২০ হয়ে গেলো। অনেক সময়ই মানিয়ে নিতে সময় লাগে , কারণ দুজন মানুষের মধ্যে ১৫/২০ বছরের চিন্তা ধারার পার্থক্য ভুলে মানিয়ে নেওয়া খুব সহজ না।

আবার যখন একটি মেয়ে যখন ঠিক করে সে ১৮/২০ বছরে বিয়ে না করে , একটু সময় নিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে তারপর বিয়ে করবে। এসব করতে গিয়ে যখন বয়স ৩০ / ৩২ হয়ে যায় তখন সে বিয়ে করার জন্য নিজের সাথে মানানসই প্রতিষ্ঠিত ৩৫/ ৩৮ বছরের ছেলে কিছুতেই পায় না। খুঁজে খুঁজে আকাশ পাতাল এক করলেও পায় না। কারণ একটি প্রতিষ্ঠিত ছেলে কিছুতেই মাত্র ৫/৬ বছরের ছোটো মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হয় না। ফলত মেয়েটি বাধ্য হয় ৪৫/৫০ বছরের একটি লোককে বিয়ে করতে । বয়সের পার্থক্য সেখানেও ১৫/২০ হয়ে যায়।

একটি মেয়ে প্রতিষ্ঠিত হোক বা না হোক বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সে বয়সের দিক দিয়ে মানানসই স্বামী পায় না।
৩০/৩২ বছরের মেয়েটি যখন তার ৪৫/৫০ স্বামীর কাছ থেকে নিজের প্রাপ্য সুখ পায় না। কারণ স্বাভাবিক নিয়মে একজন যুবতী মেয়ের আর ৫০+ ব্যাক্তির শারীরিক চাহিদা এক হয় না। যার ফলে তাদের মধ্যে সুস্থ স্বাভাবিক সম্পর্ক হয় না। অনেক ক্ষেত্রে সন্তান হয় না। পুরুষ টি হীনমন্যতায় ভোগে। অনেক ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। কখনও মেয়েটি পরকীয়া করে ফেলে, বা ডিভোর্স করতে বাধ্য হয়। খারাপ মেয়ের তকমা টা গায়ে লেগে যায়।

আবার কয়েক বছর পর যখন সেই ৩৫/৪০ বছরের ছেলেটির বয়স ৫০ বছর হয় । তখন তার sexual ability আগের মতো থাকে না। তার স্ত্রী তখনও ৩০/৩৫ বছরের যুবতীই থেকে যায় ।ফলত সে তার যুবতী স্ত্রীর স্বাভাবিক শারীরিক চাহিদা পূরণে সক্ষম হয় না। যেহেতু সে বয়সের কারণে খুব স্বাভাবিক নিয়মে বুড়ো হতে শুরু করেছে তাই প্রকৃতির নিয়মে তার শারীরিক চাহিদা কমে আসতে থাকে। কিন্তু তার যুবতী স্ত্রীর তো তখনও এমনটা হবার কথা নয়। কারণ তাদের মধ্যে বয়সের পার্থক্য ১৫/২০ বছর। আর সেটা সে এত বছরে ভুলে যায় ।তাই তখন তার যুবতী স্ত্রীর স্বাভাবিক শারীরিক চাহিদা কেও বাড়াবাড়ি মনে হতে থাকে । অন্য কারো প্রতি আকৃষ্ট হলে নষ্টামি মনে হয়।

পুরুষের ক্ষেত্রে বয়সের কারণে শারিরীক চাহিদা থাকা স্বাভাবিক , নারীদের থাকলে সেটা নষ্টামি ! এই কথা টা কি একবিংশ শতাব্দীতে মানায় ? বা কোনো দিন কি এটা যুক্তিযুক্ত ছিল ?

বয়সের পার্থক্য থাকুক, তবে সেটা যেনো জেনারেশন এর পার্থক্য না হয়ে যায় ! বয়সের এতটা পার্থক্য কেনো? অনেক ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র বয়সের পার্থক্যের এর জন্য আজ সমাজে পরকীয়া , ডিভোর্স বেড়ে যাচ্ছে।

পরকীয়া একটি সামাজিক বাধ্যির থেকে কিছু কম না। এর ফশ্রুতিতে ভুগতে হয় দুটি মানুষ কে না তাদের পরিবারের সকল কে। সকলের প্রতি অবিশ্বাস ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। ডিভোর্সের ফলে সবচেয়ে ক্ষতি গ্রস্ত হয় সন্তানরা।
বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সের এত পার্থক্য সংসার জীবনের উপরও প্রভাব ফেলে। স্বামীর ৩৫ বা ৪০ বছরের জ্ঞান আর স্ত্রীর ১৯/২০ বছরের জ্ঞান কখনই সমান হবে না। আবার স্ত্রীর ৩০/৩২ বছরের চিন্তা ধারার সাথে ৫০ বছরের স্বামীর চিন্তা ধারার মিল হয় না।

আমরা সবাই জানি মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় একটু কম বয়সে পরিনত হয় , শারীরিক ও মানসিকভাবেও। একটা ছেলে ৩০ বছরে যতটা পরিনত হয় একটা মেয়ের ক্ষেত্রে সেটা ২৫ বছর, ১৮ না।

তাই পুরুষদের বলছি যদি সুখের বিয়ে করতে চান অবশ্যই নিজের সমান কাওকে বিয়ে করুন অথবা ৪-৫ বছরের পার্থক্য করুন, এর বেশি না।এমন মানসিকতা কেন আজ আপনাদের? ২৫/৩০ বছরে কোনো মেয়ে বুড়ি হয় না। পরিণত হয়। ১৮/২০ টা বিয়ের বয়স না। পড়াশোনা করার বয়স , শেখার বয়স, পরবর্তী জীবনের জন্য নিজেকে তৈরী করার সময়। বিয়ের ক্ষেত্র এই বয়সের বিস্তর পার্থক্যটা ১৫/২০ থেকে ৫/৬ বছরে নিয়ে আসলে পরকিয়া , ডিভোর্স অনেকটাই কমবে। সমবয়সী কাউকে বিয়ে করুন।বন্ধুর জায়গাটাও পূরণ হবে।

আর কিছু মহিলাদেরও বলছি , প্রতিষ্ঠিত ছেলেকে বিয়ে করার অধিকার যেমন আপনার আছে, তেমনই কিছু অর্থনৈতিক দায়িত্ব আপনারও আছে সংসারের প্রতি। নিজে বেকার হয়েও তাড়াতাড়ি প্রতিষ্ঠিত হতে না পারার কারণে প্রেমিক কে ত্যাগ করা টা কোনো মহান কাজ না। রূপ যৌবন ফুরিয়ে গেলে আপনার অর্থবান স্বামী আপনাকে ত্যাগ করতে পারে । নিজেও কিছু করার চেষ্টা করুন।

আপনি একটু সুন্দরী বলে নিজের থেকে বয়সে ১৫/২০ বছরের বড়ো সম্পদশালী লোককে বিয়ে করে তার সম্পত্তির অর্ধেক মালকিন হওয়ার দাবি করেন। অথচ আপনি নিজে সম্পূর্ণ বেকার এবং অযোগ্য ছিলেন বিয়ের আগে। অতএব আপনি আপনার সৌন্দর্য্যের বিনিময়ে অর্থলাভ করলেন , বয়সের সাথে সাথে যখন আপনার সৌন্দর্য্য ফুরিয়ে যাবে তখন আপনের অর্থবান স্বামীর অযোগ্য আপনাকে আর ভালো নাও লাগতে পারে। তখন আপনার স্বামী অন্য নারীতে আসক্ত হয়ে পড়লে সে চরিত্রহীন। আর আপনি কম বয়সে রূপ ও টাকার বিনিময় সিস্টেম এই বিয়েটা করেছিলেন তবুও আপনি সতী।

তাই নিজেকে যোগ্য তৈরি করার চেষ্টা করুন। সৌন্দর্য্য প্রকৃতির দান , বয়সের সাথে সাথে চলে যায়। যোগ্যতা অর্জন করুন সেটাই আপনার সাথে থাকবে।

আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রতিষ্ঠিত বয়স্ক স্বামী যদি কোনো কারণে গরীব হয়ে যায়। তার তার যুবতী স্ত্রী তাকে ত্যাগ করে। অথবা একসাথে থাকলেও দুর্ব্যবহার করে, অর্থ কম হওয়ার জন্য দোষারোপ করে। কিন্তু সে নিজে স্বামীকে সহযোগিতা কিছুতেই করবে না কারণ সে সুন্দরী।

১৫/২০ বছরের প্রতিষ্ঠিত লোককে বিয়ে করে অনেক মেয়েরা কখনোই খুব খুশি হয়ে থাকতে পারে না বলেই তো পরে আবার অন্য সম্পর্ক তৈরি করে । এর চেয়ে ভালো সঠিক সময়ে সঠিক মানুষকে বিয়ে করা , যেটা ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই বিবেচিত হওয়া উচিত।বিয়েটা হওয়া উচিত দুটো মানুষের সামগ্রিক চিন্তা ,ভাবনা গতি প্রকৃতি ,খারাপ ভালোর নিরিখে। জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ স্থায়ী সম্পর্ক বিয়ে , এটা বিনিময় প্রথা না।

*




0 Comments 464 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024