FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

আমার জেলা কুড়িগ্রাম

আমার জেলা কুড়িগ্রাম

ভৌগোলিক সীমানা
কুড়িগ্রাম জেলার উত্তরে লালমনিরহাট জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা, দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা, পূর্বে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ধুবড়ী জেলা ও দক্ষিণ শালমারা মানকার চর জেলা এবং পশ্চিমে লালমনিরহাট জেলা ও রংপুর জেলা অবস্থিত।
নামকরণ
কুড়িগ্রাম জেলার নামকরণের ইতিহাস নিয়ে অনেক কিংবদন্তি রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্নাতীত বা সন্দেহমুক্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সবই কিংবদন্তি ও প্রচলিত লোকশ্রুতি। তার কিছু কিছু বিষয় সমর্থনযোগ্য মনে হতে পারে। জানা যায়, কোন এক সময় মহারাজা বিশ্ব সিংহ কুড়িটি জেলে পরিবারকে উচ্চ শ্রেণীর হিন্দুরূপে স্বীকৃতি দিয়ে এ অঞ্চলে প্রেরণ করেন। এ কুড়িটি পরিবারের আগমনের কাহিনী থেকে কুড়িগ্রাম জেলার নামকরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বিলু কবীরের লেখা 'বাংলাদেশের জেলা নামকরণের ইতিহাস' বই থেকে জানা যায়, এখানে কুড়িটি মেচ্ তৈলজীবী পরিবারের বসতি ছিল বলে এ রকম নামকরণ হয়েছে। অন্য আরেকটি লোকশ্রুতি হলো : রঙ্গপুর অর্থাৎ এই অঞ্চল একদা ছিল কুচবিহার রাজ্যের অন্তর্গত। কুচবিহারের বাসিন্দাদের বলা হয় কোচ। এরা তিওড় গোষ্ঠীবিশেষও। মাছ ধরে বিক্রি করা তাদের পেশা। সুবিধাবঞ্চিত নীচু শ্রেণীর এই হিন্দু কোচদের কুড়িটি পরিবারকে সেখান থেকে এখানে প্রেরণ করা হয়েছিল বা আনয়ন করা হয়েছিল বসতি স্থাপনে জন্য। ওই কুড়িটি কোচ পরিবারের কারণে 'কুড়িগ্রাম' নামকরণ হয়েছে। আবার এমনও জানা যায়, এই গ্রামে কুরি বা কুরী নামক একটি হিন্দু আদিবাসী বা নৃগোষ্ঠী বসবাস করত বলেই অঞ্চলটির নাম হয় 'কুড়িগ্রাম'। অদ্যাবধি এখানে 'কুরি' নামক আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস লক্ষ্য করা যায়। এখনও এ অঞ্চলে কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি চালু রয়েছে। বিশিষ্ট পণ্ডিত জা পলিলুস্কি প্রমাণ করেছেন, গণনার এ পদ্ধতি বাংলায় এসেছে কোল ভাষা থেকে। কোল অস্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। আরব অস্ট্রিক ভাষায় কুর বা কোর ধাতুর অর্থ হলো মানুষ। কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতিটিও এসেছে মানুষ থেকেই। এ অস্ট্রিক কারা? পন্ডিতদের মতে, প্রত্নপ্রস্তর যুগে এ অঞ্চলে বাস করত নিগ্রো জাতি। এরপর আসে নব্যপ্রস্তর যুগ। আসামের উপত্যকা অতিক্রম করে আসে অস্ট্রিক জাতীয় জনগোষ্ঠী। তারপরে আসে দ্রাবিড় ও মঙ্গোলীয়রা। এদের মিলিত স্রোতে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় মানবসভ্যতার সূচনা হয়। এরাই লাঙ্গল দিয়ে চাষের প্রবর্তন করেছে। কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি করেছে চালু। নদনদীতে ডিঙি বেয়েছে, খেয়েছে শুঁটকি, খেয়েছে বাইগন বা বেগুন, লাউ বা কদু, কদলী বা কলা, জাম্বুরা, কামরাঙ্গা। করেছে পশু পালন। এঁকেছে কপালে সিঁন্দুর। করেছে রেশম চাষ। করেছে তামা, ব্রোঞ্জ ও সোনার ব্যবহার। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন, ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করত 'ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি'। ১৮৫৮ সালের পর শাসনকার্যের ক্ষমতা চলে যায় ব্রিটিশ সরকারের হাতে। এই ব্রিটিশ সরকারের আমলে কুরিগঞ্জ চারটি থানায় বিভক্ত ছিল। পরে ১৮৭৫ সালে ২২ এপ্রিল তারিখে একটি নতুন মহকুমার গোড়াপত্তন হয়। এ মহকুমার নাম 'কুড়িগ্রাম'। কুড়িগ্রামঘেষা ব্রহ্মপুত্রের কারণে এখানে আসে বিভিন্ন আদিম জনগোষ্ঠী। এসব কারণে এখানে গড়ে উঠেছিল একটি সভ্যতাও। বিজিত আর্যদের কোন স্মৃতি এখানে নেই। তবে অন্যদের কিছু কিছু ক্ষীয়মাণ রাজচিহ্ন রয়েছে। বারো বা দ্বাদশ শতকের প্রথমপর্বে এ অঞ্চলে সেন রাজবংশের শাসনকাল আরম্ভ হয়। রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চত্রা নামক গ্রামে এদের রাজধানী ছিল। এ বংশের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন রাজার নাম নীলধ্বজ সেন, চক্রধ্বজ সেন, নীলাম্বর সেন। সেনবংশের পতনের পর শুরু হয় মুঘল যুগ।
• আয়তন: ২২৩৬.৯৪ বর্গ কি. মি.
• সংসদীয় এলাকার সংখ্যা: ৪টি, নাম ও এলাকা:
1. কুড়িগ্রাম- ১ (নাগেশ্বরী,কচাকাটা, ভুরঙ্গামারী)
2. কুড়িগ্রাম- ২(রাজারহাট, কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী)
3. কুড়িগ্রাম– ৩ (উলিপুর,চিলমারী)
4. কুড়িগ্রাম- ৪ (রৌমারী, রাজিবপুর)
• জনসংখ্যা : মোট- ১৮০১৩৫৬ জন, পুরুষ- ৯০৫৯৪৪ জন, মহিলা- ৮৯৫৪১২ জন
• ভোটার সংখ্যা : মোট- ১০৮১১৫৭ জন, পুরুষ: ৫৪১৮৯৫ জন, মহিলা- ৫৮১০৬২ জন
• শিক্ষার হার: ৩৬.৯৯%
• উপজেলার সংখ্যা : ৯টি
• পৌরসভার সংখ্যা : ৩টি
• ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা: ৭২টি
• গ্রামের সংখ্যা: ১৮৬০টি
• কলেজের সংখ্যা: ৬৪টি
• হাইস্কুলের সংখ্যা ২৬৬টি
• মাদ্রাসার সংখ্যা: ২৩৮টি
• সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা: ৫৬৩টি
• বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা: ৫৪৫টি
• মসজিদের সংখ্যা: ৩৪৯৩টি
• মন্দিরের সংখ্যা: ১৮০টি
• গির্জার সংখ্যা: ৩টি
• মোট আব্দী জমির পরিমাণ: ২৫৯৬০৮.২১ একর
• অর্থকরী ফসল: ধান, গম, আলু, পাট, তামাক, সরিষা, সুপারী, বাঁশ, আখ, ভুট্টা, বাদাম, কাউন প্রভৃতি।
• শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা: মোট- ৮৯৩টি, ৪টি বড়, ২৭টি মধ্যম এবং ৮৬২টি কুটির শিল্প।
• পাকা রাস্তা : ৪১৪.৯২ কি. মি.
• কাচা রাস্তা: ৪২৬৭.৫৬ কি. মি.
কৃতি ব্যক্তিত্ব
• তারামন বিবি, বীর প্রতীক - মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য খেতাব প্রাপ্ত।
• সৈয়দ শামসুল হক - প্রথিতযশা সাহিত্যিক
• আব্বাসউদ্দীন আহমদ - ভাওয়াইয়া সম্রাট হিসেবে খ্যাত। মূলত কুচবিহারে জন্মগ্রহণ করলেও রংপুর বেতার কেন্দ্রে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন, কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দর নিয়ে গান রচনা করেছেন।
• কছিম উদ্দিন - ভাওয়াইয়া যুবরাজ নামে পরিচিত।




*




0 Comments 481 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024